ডায়াবেটিস রোগীর করণীয় /ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা-২০২৪

ডায়াবেটিস রোগীর করণীয় /ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা-২০২৪।আসালামু আলাইকুম সুধি পাঠক পাঠিকা আশা করি আপনারা সবাই আল্লাহর অসিম কিপায় ভালো আছেন।আজ আমি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানাবো ডায়াবেটিস রোগীর করণীয় কি এবংডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা কি ধরনের হওয়া উচিত।

ডায়াবেটিস রোগীর করণীয় /ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা-২০২৪
learning official bd

ভূমিকাঃডায়াবেটিস হল শরীরের এমন একটি গুরুতর অবস্থা।যখন আমাদের শরীর নিজে থেকে ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না বা তৈরি হওয়া ইনসুলিন দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করতে পারে না। এর ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়।ইনসুলিন মানুষের শরীরের কোষগুলি তে শর্করা প্রবেশ নিয়ন্ত্রন করে। অর্থাৎ একটি চাবি হিসাবে কাজ করে। এর দ্বারা আমাদের খাবার থেকে যে শর্করা পাওয়া যায়, তা রক্তের মধ্য দিয়ে বাহিত হয়ে কোষের মধ্যে প্রবেশ করতে পারে। তারপর, কোষ শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তির জন্য সেই গ্লুকোজ ব্যবহার করে। ইনসুলিন তৈরি হয় অগ্ন্যাশয়ের বিশেষ কোষ দ্বারা তৈরি হরমোন আইলেটস  থেকে। ডায়াবেটিস-জনিত ইনসুলিনের তারতম্যের জন্য আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রার তারতম্য ঘটে। শরীরে বেশ কিছু অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়।

ডায়াবেটিস রোগীর সাধারন করনীয়ঃ মরণ বেধি এই রোগের কিছু করণীয় নিম্নে দেওয়া হলোঃ

পরিক্ষা নিরিক্ষাঃ

  • শরীর দূর্বল লাগলে,বমি হলে,হার্টর ফেল হলে, শ্বাস কষ্ট হলে,গর্ভাবস্থায় অথাবা যে কোন সার্জারির সময় রক্তের সুগারের পরিমাণ মাপাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন।
  • প্রতি মাসে কমপক্ষে ১ বার রক্তের সুগার পরিমাপ করা উচিত।
  • ৬ মাস পর পর পরিক্ষা Serum creatinine & Uric Acid করাবেন।
  • ১ বছর পর পর HbAlc & Fasting Lipid profile পরিক্ষা করাবেন।
  • নিয়মিত রক্ত চাপ পরিক্ষা করবেন।
  • প্রতিবছর এক বার চোখ পরিক্ষা করবেন।
  • ৪৫ বছরের উপরের রোগী হলে প্রতিবছর ECG করাবেন।

হাটার নিয়মঃ 

  1. প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাটবেন। প্রথম ৫-১০ মিনিট স্বাভাবিক গতিতে।মধ্যের ৫-১০ মিনিট দ্রুত গতিতে। শেষের ৫-১০ মিনিট পুনরায় স্বাভাবিক গতিতে হাঁটবেন।
  2. সপ্তাহে কমপক্ষে ৫ দিন হাঁটবেন।পর পর ২ দিন হাটা বন্ধ করা যাবে না।

যেসব খাবার খাওয়া যাবে ঃ

  1. তিন বেলার খাবার ভাগ করে ৫-৬ বারে খাবেন।
  2. মাটির নিচে হয় এমন সবজি কম খাবেন ( কচু, আলু,মুলা,ওলপফি,গাজর,শালগম ইত্যাদি)।
  3. কামড়ে খাওয়া যায় এমন ফল খাওয়া যাবে। (আপেল নাশপাত অর্ধেক,বরই ৫-৬ টা,ছোট কলা একটা,বড় অর্ধেক, আমরা, পেয়ারা,কামরাজ্ঞা,জলপাই,জামরুল, শসা ইচ্ছে মত)।
  4. রসালো ফল কম খাবেন। যেমন ঃ কমলা,তরমুজ,কাঁঠাল,আজ্ঞুর, আনার, পেঁপে ইত্যাদি।
  5. চিনি/গুড় দিয়ে তৈরি মিষ্টি জাতীয় খাবার খাবেন না।
  6. চর্বি জাতীয়  খাবার কম খাবেন। না খাওয়াই ভালো।

খাদ্য তালিকা ও খাওয়ার সময়ঃ

  • সকালের নাশতা (৮-৯টা)ঃ হাতে বানানো রুটি ২/৩/৪ টা। সবজি ইচ্ছে মত, ডিমের সাদা অংশ ১টা,চিনি ছাড়া চা।
  • পূর্বাহৃ ( ১০-১১টা)ঃ ১ রুটি+সবজি অথবা ১ কাফ মুড়ি অথবা ১ কাফ চিড়া ভিজানো। সাথে ১ টা ফল।
  • দুপুরের খাবার (২-৩টা)ঃ ভাত ২/৩/৪ কাফ শরীরের ওজন অনুযায়ী। সবজি ইচ্ছে মত, ডাল ১ কাফ,মাছ/মাংস ২ টুকরা।
  • বিকালের নাশতা (৫-৬টা)ঃ মুড়ি ১ কাফ+দুধ ১ কাফ ( স্বর ছাড়া) অথবা বিস্কুট চিনি ছাড়া ৩/৪ টা। ফল ১ টা।
  • রাতের খাবার ( ৮.৩০ - ৯ টা)ঃহাতে বানানো রুটি ২/৩/৪ টা। সবজি ইচ্ছে মত, ডাল ১ কাফ, মাছ/মাংস ২ টুকরা।
পরিশেষেঃ ডায়াবেটিস বর্তমানে একটি মরন বেধি রোগ। এটি আস্তে আস্তে মানুষের দেহকে নিশ্তেস করে দেয়। এ থেকে বাঁচতে হলে  অব্যশই আমাদের কে নিয়ম মাফিক চলতে হবে। নিয়ম মেনে না চললে এ থেকে বাঁচার কোন উপায় নেই। সুতরাং আমাদের কে অবশ্যই অনেক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বিশেষ করে খাদ্য তালিকা মেনে চলতেই হবে। উপরে কিছু দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ গুলো আমরা মেনে চতে পারি।
আরো পড়ুনঃ
Next Post Previous Post