বাসক পাতার উপকারিতা ও ঔষধিগুন/বাসক পাতার রস খেলে যেসব রোগের উপকার হয়-২০২৪
বাসক পাতার উপকারিতা ও ঔষধিগুন/বাসক পাতার রস খেলে যেসব রোগের উপকার হয়-২০২৪। আসালামু আলাইকুম সুধি পাঠক পাঠিকা আশা করি আপনারা সবাই আল্লাহর অসিম কিপায় ভালো আছেন।আজ আমি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানাবো বাসক পাতার উপকারিতা ও ঔষধিগুনকি। বাসক পাতার রস খেলে যেসব রোগের উপকার পাওয়া যায় তা নিম্নে আলোচনা করা হলো।
 |
| বাসক পাতার ছবি |
ভূমিকাঃ বাসক ভারত উপমহাদেশের একটি ভেষজ উদ্ভিদ। আর্দ্র ও সমতল্ভূমিতে এটি বেশি উৎপাদন হয়।লোকালয়ের কাছেই এটি বেশি জন্মে। হালকা হলুদে রঙয়ের ডালপালা যুক্ত ১ থেকে ২ মি উঁচু গাছ।এর পাতা বেশ লম্বা,ফুল ঘন ও ছোট স্পাইকের উপর ফোটে।স্পাইকের বৃন্ত পাতার চেয়ে ছোট।স্পাইকের ওপর পাতার আকারে উপপ্ত্র থাকে যার গায়ে ঘন ও মোটা শিরা থাকে।ফুল সাদা বর্নের হয়ে থাকে।তার উপর বেগুনি দাগ থাকে।ফল সুপারি আকৃতির;বীজে ভর্তি থাকে।
বাসকের ঔষধিগুনা গুন সমূহঃ ভাজা অথবা শুকানো পাতা ঔষধের কাজে লাগে।বাসকের পাতায় "ভাসিসিন" নামক ক্ষারীয় পর্দাথ এবং তেল থাকে।শ্বাসনালির লালাগ্রন্থিকে সক্রিয় করে বলে বাসক শ্লেষ্মানাশক হিসেবে বিবেচিত।বাসক পাতার নির্জাস,রস বা সিরাপ শ্লেষ্মা তরল করে নির্গমে সাহায্য করে বলে সর্দি,কাশি এবং শ্বাসনালির প্রদাহমূলক ব্যাধিতে বিশেষ উপকারি। তবে অধিক মাত্রায় খেলে বমি হয় এবং অস্বস্থি হয়।বৈজ্ঞানিক পরিক্ষায় বাসকের ভেষজ গুনাবলি প্রমানিত।
বাসকের ঔষধি প্রয়োগঃ
- বাসক পাতার রস ১-২ চামচ হাফ থেকে এক চামচ মধুর সাথে খেলে শিশুর সর্দিকাশির উপকার হয়।
- বাসক পাতার রস গোসলের ৩০ মিনিট আগে মাথায় কয়েকদিন মাখলে উকুন মরে জায়।আমবাত ও ব্রণশোধে বাসক পাতা বেটে প্রলেপ দিলে ব্যাথা ও ফোলা কমে যায়।
- বুকে কফ জমে শ্বাসকষ্ট হলে বা কাশি হলে বাসক পাতার রস ১-২ চামচ এবং ১-২ চামচ কান্টিকারী রস ও ১ চামচ মধুসহ খেলে সহজে কফ বেরিয়ে আসে।
- প্রসাবে জ্বালা যন্ত্রণা হলে বাসকের ফুল বেঁটে ২-৩ চামচ ও ১-২ চামচ মিছরি সহ সরবত করে খেলে এই রোগে উপকার পাওয়া যায়।
- শরীরে দাদ থাকলে বাসক পাতার রসের সাথে এক্টুকরা হ্লুদ মিশিয়ে লাগালে দাদ ভালো হয়ে যায়।
- বাসক পাতার বা ফলের রস মধু বা চিনির সাথে মিশিয়ে খেলে জন্ডিস ভালো হয়।
- পাতার রস নিয়মিত খেলে খিচুনি রোগ দূর হয়ে যায়।
- এক কলসি পানিতে ৩থেকে ৪টি বাসক পাতা ৩-৪ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখলে সেই পানি বিশুদ্ধ হয়ে যায়। এবং পরে ব্যবহার করা যায়।
- যাদের গায়ে ঘামের গন্ধ হয় তারা বাসক পাতার রস গায়ে মাখলে দূগন্ধ দূর হয়।
- পেটে কৃমি থাকলে বাসকের ক্বাথ খাওয়ালে এর উগ্র তিক্ত স্বাদে কৃমি বের হয়ে যায়।
- জ্বর হলে বা অল্প জ্বর থাকলে বাসকের মূল৫-১০ গ্রাম থেঁতো করে১০০ মিলি লিটার পানিতে ফোটাতে হবে এবং ২৫ মিলি লিটার পানি থাকতে নামিয়ে তা ছেকে নিলে দিনে ২ বার করে খেলে জ্বর কাশি উভয়ই ভালো হয়।
- পাইরিয়া বা দাতের মারি দিয়ে রক্ত পরলে বাসক পাতা ২০ টি থেতো করে ২ কাফ পানিতে সিদ্ধ করে এক কাফ পানি থাকতে নামিয়ে ঈষদুষ্ণ অবস্থায় কুল কুলি করলে এই রোগ থেকে উপকার পাওয়া যায়।
পরিশেষেঃ বাসক পাতা সবুজ খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।এবং পাতা থেকে হলুদ রং পাওয়া জায়।বাসক পাতার এমন কিছু ক্ষারীয় পর্দাথ আছে যার কারনে ছত্রাক জন্মায় না এবং পোকামাকড় ধরে না বলে ফল প্যাকিং ও সংরক্ষণ কাজে ব্যাবহৃত হয়। পাতার কিছুটা দূগন্ধ আছে বলে পশুরা এতে মুখ দেয় না।ফলে চাষের জন্য উপযোগী। এবং এর অনেক ঔষুধি গুন রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ
