একজন ভালো বক্তা হওয়ার কৌশল/কিভাবে ভালো বক্তা হওয়া যায়-২০২৪
একজন ভালো বক্তা হওয়ার কৌশল/কিভাবে ভালো বক্তা হওয়া যায়-২০২৪। আসালামু আলাইকুম সুধি পাঠক পাঠিকা আশা করি আপনারা সবাই আল্লাহর অসিম কিপায় ভালো আছেন।আজ আমি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানাবো কিভাবে আপনি একজন ভালো বক্তা হবেন এবং সাবলিল ভাবে দর্শকের সামনে উপস্থাপনা করতে পারেন।
ভূমিকাঃ পড়ালেখার পাশাপাশি নিজেকে অন্যান্য জায়গায়ও মেলে
ধরতে হবে। যাতে ক্যারিয়ার গঠনের সময় এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগে।নিজেকে সবার সামনে তুলে ধরার
জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন প্লাটফর্ম হচ্ছে পাবলিক স্পিকিং, যা জীবনের অসংখ্য ক্ষেত্রেই
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন বিষয়। পাবলিক স্পিকিং বা সরাসরি দর্শক-শ্রোতাদের সামনে দাঁড়িয়ে
সুন্দরভাবে কথা বলতে পারার বিষয়ে বহুদিন ধরে যে জনশ্রুতি চলে আসছে তা হলো-এ ধরনের দক্ষতাসম্পন্ন
মানুষের মধ্যে সহজাত ভাবেই এ গুনটি রয়েছে। কিন্তু এই ধরনের ধারনা ভুল।সত্যিটা হচ্ছে,
যথেষ্ট পরিশ্রম করে নিজেদেরকে এই পর্জায়ে নিয়ে
এসেছেন তাঁরা।পাবলিক স্পিকিং দক্ষতাও মানুষকে অর্জন করতে হয়।এ বিষয়ে উন্নতি
করতে চাইলে নিয়ম মেনে চর্চা ও অনুশীলন করতে হবে এবং সফলতা অর্জনের মত মনমানসিকতা রাখতে
হবে।
1. সুন্দর
বাচন ভজ্ঞি থাকাঃ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সব পাবলিক স্পিকারের মধ্যে একটি সাধারন বৈশিষ্ঠ্য
হলো অন্যদের প্রভাবিত করার ক্ষমতা।জন এফ কেনেডি,মারটিন লুখার কিং,স্টিভ জবস প্রমুখ
সবার মধ্যেই এই বৈশিষ্ঠ্য লক্ষ করা জায়।এর রহস্য কি? রহস্য হলো তাদের বাচনভজ্ঞি,শরীরীভাষা,শব্দ
চয়ন, স্বরের ওঠানামা। তাঁরা এমন কিছু শব্দ ব্যাবহার করেতেন যা মানুষের মধ্যে গেথে যায়
এবং আকর্ষনীয় করে তোলে।পাশাপাশি তাঁরা বাক্যের কিছু কিছু জায়গায় স্পেস দিতেন, স্বর
ওঠানামা করার মাধ্যমে বৈচিত্র আনতেন।
2. দর্শকের
কথা মাথায় রেখে বক্ত্যব করাঃ স্পিকারের দর্শক বিভিন্ন বয়স, পেশা ও মতাদর্শের অনুসারী
হয়ে থাকেন।অধিকাংশ সময়ে সবাই যে ভুল টি করে থাকে,তা হলো সব বয়স ও পেশার মানুষের জন্য
একই ধরনের স্পিচ দিয়ে থাকে।শিশু ও মধ্যবয়স্ক ব্যাক্তির বয়সের পার্থক্য-এদের মানসিকতাতেও
পার্থক্য তৈরি করে।একজন গবেষক ও ব্যবসায়ীর মধ্যে কর্মক্ষেত্রের ভিন্নতা থাকার ফলে একই
স্পিচ তাদের মধ্যে একই রকম উপলব্ধি তৈরি করতে পারে না।এ জন্য একেকটি গ্রুপকে একেকভাবে বোঝানো প্রয়োজন। দর্শকের কথা মাথায় রেখে
স্পিচ দেয়া উচিত।এ কারনে দর্শক কোন ধরনের,
কি ধরনের বিষয় তিনি বুঝবেন-কিভাবে বোঝালে তিনি ভালো বুঝবেন,কোন ধরনের কথা তার কাছে
প্রাসজ্ঞিক–এ সব কিছু মাথায় রেখে স্পিচ প্রস্তুত করা এবং বুঝানোর উপায় নির্ধরণ করা
প্রয়োজন।
3. গল্প
বলার দক্ষতা থাকাঃ গল্প বলার দক্ষতা উপস্থিত
পরিস্থিতিকেই বদলে দেয়।গল্প যে কোন সময় বলতে পারবেন, তবে শুরুতে বলতে পারলে ভালো।গল্প
বলার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত জীবনের গল্প অথবা স্পিচের সাথে মিলিয়ে বাস্তবভিত্তিক গল্প
কোন গল্প বলতে পারলে ভালো তে স্পিচের প্রতি শ্রোতার আর্কষণই বহুগুনে বূদ্ধি পায়। গল্প
বলার ক্ষেত্রে সহজ ও সাবলিল ভাষা ব্যবহার করতে হবে যাতে সহজেই দর্শকের অনূভূতি স্পর্শ
করা জায়।পাবলিক স্পিকিংয়ে সফলতা অর্জন করতে হলে, অবশ্যই স্পিকারকে সাবলিলভাবে গল্প
বলাল দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
4. পাবলিক স্পি্কিংয়ে ভয়কে জয় করাঃ পাবলিক স্পিকিংয়ে ভয়কে বলে গ্লোসোফেবিয়া, যা অনেক মানুষের রয়েছে।এটি কাটানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন।এক্ষেত্রে আপনি নিজের সজ্ঞে নিজে বেশি বেশি কথা বলার অভ্যাস তৈরি করুন।অনেক বন্ধু বানান তাদের সাথে বেশি বেশি কথা বলুন।আয়নার সামনে অনুশীলন করুন। যত বেশি অনুশীলন করবেন তত তারাতারি আপনার পক্ষে ভয় কাটানো সম্ভব। এবং উপস্থাপনার সজ্ঞে আপনার সম্পর্ক আরো বেশি দূঢ় হবে।এতে আপনি দূত সবলিলভাবে উপস্থাপনা করতে পারবেন।
5. দর্শকের মতামতকে গুরুত্ব দেয়াঃ দর্শকের দিকে নজর রাখা গুরুত্বপূর্ণ। তাদের প্রতিক্রিয়া লক্ষ করো, প্রয়োজন হলে তোমার বক্তব্যে কিছু পরিবর্তন আনো। একদম গৎবাঁধা বক্তব্য দিলে তুমি সবচেয়ে আগ্রহী শ্রোতারও মনোযোগ পাবে না।
শেষকথাঃমানুষের উন্নতির পথে অন্যতম প্রধান বিষয় হলো ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নেওয়া। যারা ভাবে তারা সব কিছু জানে, তারা সাধারনত গড়পড়তা বা দূর্বল উপস্থাপক হয়। আপনাকে চেষ্টা করতে হবে।ব্যর্থতা জীবনে আসবেই।ব্যর্থতাকে আপনার অযোগ্যতার লক্ষন নয়-বরং সেটাকে কিছু শেখার সুযোগ হিসেবে নিতে হবে।মূল হচ্ছে, ঘটনাটাকে নিজের উন্নতি পথেই একটা পদক্ষেপ হিসেবে দেখার মানসিকতা তৈরি করা।