মিষ্টি আলুর গুণাগুণ ও উপকারিতা/ মিষ্টি আলুর চাষ পদ্ধতি কি-২০২৪
মিষ্টি আলুর গুণাগুণ ও উপকারিতা/ মিষ্টি আলুর চাষ পদ্ধতি কি-২০২৪। আসালামু আলাইকুম সুধি পাঠক পাঠিকা আশা করি আপনারা সবাই আল্লাহর অসিম কিপায় ভালো আছেন।আজ আমি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানাবো মিষ্টি আলুর গুণাগুণ ও উপকারিতা কি, এবং কোন পদ্ধতিতে চাষ করলে মিষ্টি আলুর ফলন ভাল পাওয়া যায়।
ভূমিকাঃ মিষ্টি আলু খেতে খুবই সুস্বাদু।মিষ্টি আলু শুধু সুলভ,সহজল্ভ্য ও সুস্বাদুই নয়,এটি পুষ্টিগুণেও ভরপুর।মিষ্টি আলু রান্না করে,সিদ্ধ করে কিংবা পুড়িয়ে খাওয়া যায়। এছাড়াও সুপ বানাতেও এ সবজিটি ব্যবহার করা যায়।
মিষ্টি আলুর গুণাগুণ ও উপকারিতাঃ এ সবজি ভিটামিন বি-৬-এর একটি ভালো উৎস। এটি আমাদের শরীরের হোমোসাইস্টিন নামের ক্যমিক্যাল কমাতে সহয়তা করে।এই ক্যমিক্যাল হৃদরোগ সহ নান ধরনের অসুখের অন্যতম কারণ। এছাড়াও এটি ভিটামিন ডি ও সি-এর সমৃদ্ধ উৎস।ভিটামিন ডি স্বাস্থকর হাড়,হার্ট,নার্ভ,ত্বক ও দাঁতের জন্য জরুরী এবং ভিটামিন সি ঠাণ্ডা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। মিষ্টি আলু আয়রনেরও ভাল উৎস।
এটি আমাদের শরীরের শ্বেতকণিকা তৈরি, চাপ প্রতিরোধ,রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সহ নান কাজে আসে।মিষ্টি আলুতে ম্যাজ্ঞানিজ ও পটাশিয়ামও রয়েছে পর্জাপ্ত পরিমানে।ধমণি,রক্ত হাড় ও মাংস পেশির সুস্থতায় ও নার্ভের সুষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য ম্যাজ্ঞানিজ প্রয়োজন।
পটাশিয়াম হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক পর্জায়ে রাখতে উপকারি। মিষ্টি আলুতে চিনি থাকলেও তা খুব ধীরে ধীরে রক্তেত সাথে মিশে যায়।
মিষ্টি আলুর চাষ পদ্ধতি কি? কোন পদ্ধতিতে চাষ করলে ফলন ভালো পাওয়া জায়।নিচে আলোচনা করা হলঃ
- উপযুক্ত মাটি ও জমি নির্ধারণঃ মিষ্টি আলু প্রায় সব ধরনের মাটিতে চাষ করা যায়। তবে দোআঁশ ও বেলে মাটি হলে মিষ্টি আলু চাষের জন্য ভাল হয়।নদীর চরে বালি প্রধান মাটিতেও মিষ্টি আলু চাষ করা যায়।
- জাত পরিচিতিঃ আমাদের দেশে ধানের যেমন বিভিন্ন প্রকার জাত রয়েছে ঠিক তেমনি মিষ্টি আলুরও বেশ কয়েকটি জাত রয়েছে। যেমন; বারি মিষ্টি আলু-১, বারি মিষ্টি আলু-২, বারি মিষ্টি আলু-্৩, বারি মিষ্টি আলু-৪,বারি মিষ্টি আলু-৫ ইত্যাদি। অধিক ফলনের জন্য ভালজাত যাচাই করাটা জরুরী।
- চারা রোপনের সময়ঃমধ্য অক্টোবর থেকে মধ্য নভেম্বর মাস মিষ্টি আলু চাষের উপযুক্ত সময়। প্রতি শতকে ২২০-২৩০ টি লতার প্রয়োজন হয়।লতার মাথা থেকে ১ম ও ২য় খন্ড রোপন করা উচিত।সারি হতে সারির দূরুত্ব ৬০ সেমি এবং আলু থেকে আলুর দূরুত্ব ৩০ সেমি হতে হবে।সমতল পদ্ধতিতে সারি তৈরি করে লাগাতে হবে যাতে ২-৩ টি গিট মাটির নিচে থাকে।
- সার প্রয়োগ প্রদ্ধতিঃ শতক প্রতি ইউরিয়া ৬০০ গ্রাম,টিএসপি ৫০০ গ্রাম,এমপি ৭৩০ গ্রাম, গোবর ৪০ কেজি।গোবর, টিএসপি, এমপি ও ইউরিয়া সারের এক চতুর্থাংশ বপ্নের সময় জমিতে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে বাকি ইউরিয়া ও এমপি সার বপনের দুই মাস পর সারি পাশে প্রয়োগ করতে হবে।
- সেচ পদ্ধতিঃ জমি আর্দ্রতার উপর ভিত্তি করে ২-৩ টি সেচ দিতে হবে।ইউরিয়া সার পার্শ্ব প্রয়োগ সময় ২ বার গাছের গোড়া বেধে দিতে হবে।
পোকামাকড় দমনঃ
উইভিল পোকাঃ পূর্ণ বয়স্ক উইভিল পোকা ৬ মিমি লম্বা এবং ১.৪ মিমি চওড়া হয়ে থাকে।এ পোকার মাথায় শুড়ের মত একটি মুখাংশ আছে।মাথা ও শাখার উপরিভাগ গাড় নীল রঙ্গের এবং চোখ ও মুখ উজ্জ্বল লাল কমলা বর্ণের। এই পোকা কন্দ মূলের ভিতর আঁকাবাকা সুড়জ্ঞ করে ক্ষতি করে থাকে।উইভিল আক্রান্ত কন্দমূল খাওয়ার অযোগ্য হয়ে পরে।
প্রতিকারঃ মিষ্টি আলু গাছের গোড়ার আলুতে মাটি তুলে দিলে এ পোকা দমন করা যায়। আক্রান্ত মিষ্টি আলু ভাল আলুর সাথে রাখা যাবে না। মাটিতে লতা লাগানোর ৭ দিন পর থেকে ১৫ দিন পরপর মোট ৪ বার সুমিথিয়ন কীটনাশক ঔষধ ছিটালে এ পোকা দমন করা যায়।
ফসল সংগ্রহঃ চারা রোপনের ১৩০-১৫০ দিনের ভিতরে মিষ্টি আলু তুলে সংগ্রহ করা যায়।
পরিষেশে ঃ এই সবজি অনেক সহজল্ভ্য।এটি চাষে ঝুকি এবং খরচ দুটিই অনেক কম। এটি অনেক পুষ্টি সমৃদ্ধ সবজি । এবং দেহের জন্য অনেক উপকারি।
আরো পড়ুনঃ